প্রকৃতি লালিত কবি হচ্ছেন জীবনানন্দ দাশ। রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থটি হচ্ছে তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর এই রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থটির বিভিন্ন কবিতায় বাংলার অবিরাম সৌন্দর্যের নির্মল ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
কবি তার প্রসস্ত মন-প্রাণ দিয়ে উপভোগ করেছেন বাংলার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যকে। এই রূপসী বাংলা কাব্যে কবি সৌন্দর্য চেতনার পাশাপাশি মৃত্যু চেতনাও কবিকে স্পর্শ করেছে।
তাই ‘সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায়ও কবির মৃত্যু চেতনার স্বরূপ পরিলক্ষিত হয়।
’সেই দিন এই মাঠ’ কবিতার মূলভাব
কবি সেই দিন এই মাঠ কবিতায় রূপকথা ইতিহাস প্রকৃতি যেখান থেকেই চিত্রকল্প নিয়েছেন সেখানেই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন এক মৃত বাংলার রূপ।
কবি এখানে বুঝিয়েছেন যে সভ্যতা একদিকে যেমন ক্ষয়িষ্ণু, অন্যদিকে চলে তার বিনির্মাণ।
মরণশীল ব্যক্তি মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কিন্তু প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা। মাঠে থাকে চঞ্চলতা, চালতা ফুলে পড়ে শীতের শিশির, লক্ষী পেঁচকের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় মঙ্গলবার্তা খেয়া নৌকায় বসে নালা-নদীতে অর্থাৎ কোথাও থাকে না সেই মৃত্যুর রেশ।
কবির ভাষাতে,
“পৃথিবীর এই সব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল;
-এশিরিয়া ধুলো আজ-বেবিলন ছাই হয়ে আছে।
ফলে মৃ্ত্যুতেই সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। মানুষের সাধারণ মৃত্যু পৃথিবীর বহমানতা রহিত করতে পারে না।”
আরও পড়ুন:
- সোনার তরী কবিতার মূলভাব ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর
- বাংলার মুখ কবিতার মূলভাব আলোচনা কর
- ’দুঃসময়’ কবিতার মূলভাব আলোচনা কর
- বিদ্রোহী কবিতার মূলভাব ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর
পরিশেষে বলা যায় যে, সেই দিন এই মাঠ কবিতার মূল কথা এই যে প্রকৃতপক্ষে মানুষের মৃত্যু আছে কিন্তু এই জগতে সৌন্দর্যের মৃত্যু নেই। এবং সেই সাথে মরণ নেই মানুষের স্বপ্নেরও। আলোচ্য কবিতায় কবির এই চেতনাকেই মূলত লিপিবদ্ধ করেছেন।


